স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘দেবোত্তর সম্প্রতি ক্রয় বা বিক্রয় করা নিষেধ; আইনে ব্যাপারটি স্পষ্ট লেখা থাকলেও ৬টি দলিলে জিউস পুকুর নামক দেবোত্তর সম্পত্তির মালিকানা দাবী করছেন মেয়রের মা, ২ ভাই, চাচা, চাচী, নানা ও মামারা। এখন জনগণের রোষানল থেকে বাঁচতে সেই মেয়র স্থানীয় সংসদ সদস্যকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষে বিভ্রান্ত করেছেন। আশ্রয় নিচ্ছেন মিথ্যার।’
একটি গণমাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের জেষ্ঠ সহ-সভাপতি ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে উপরোক্ত কথা বলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘ আমার নানার কেনা জায়গার মালিক তার ছেলে-মেয়েরা। আমার মা-ও মালিক। এখানে আমার অপরাধ কোথায়? নানার কেনা জমি নিয়ে মামলাও হয়েছিল। সেই মামলায় নানার বাড়ির লোকেরা জিতেছিল। ১৯৮০ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তারা সেখানে মাছ চাষ করেছে। পরে পারিবারিক ঝামেলার কারণে চাষ বন্ধ রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সেটা নিয়ে আবার মামলা দায়ের করা হয়েছে। নারয়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান উসকানি দিয়ে আমার বিরুদ্ধে অহেতুক এসব অভিযোগ তুলেছেন, আন্দোলন করাচ্ছেন।’
মেয়রের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় খোকন সাহা বলেন, ‘প্রথমত দেবোত্তর সম্পত্তি বেঁচা-কেনা যায় না। তারপরেও তথাকথিত দলিলের মাধ্যমে মেয়র বলছেন, নানার কেনা জায়গায় ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়েছেন তাঁর মা। আমার প্রশ্ন- তাহলে কোন ওয়ারিশের বলে, তাঁর চাচা, চাচী মালিক হয়েছে? কোন ভাবেই তো তাঁর নানার সম্পদের মালিক মেয়রের চাচা-চাচী হতে পারে না। তাঁছাড়া দলিলে স্পষ্ট লেখা আছে ওয়ারিশ সূত্রে নয় বরং ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন মেয়রে মা, ২ ভাই, চাচা ও চাচি। এছাড়াও একই দিনে ক্রয় সূত্রে মালিক হয়েছেন মেয়রের নানা ও মামারা। এ ক্ষেত্রে নানার ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির মালিক ‘তাঁর ছেলে মেয়ে’ দাবী করা আইভীর বক্তব্যে আইনগত ভাবে সঠিক না। মেয়র আইভীর বক্তব্য মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এখনে মেয়র আইভী সত্য কথা উপস্থাপন না করে জনরোষ থেকে বাঁচার জন্য শামীম ওসমানকে জড়িয়ে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়েছেন। যা নারায়ণগঞ্জের ধর্মপ্রাণ মানুষ ইতোমধ্যে প্রত্যাক্ষাণ করেছেন। এ ঘটনায় মেয়র আইভী শামীম ওসমানকে জড়িয়ে সত্য ঢাকার চেষ্টা করছেন।’
খোকন সাহা আরও বলেন, ‘আমি দেবোত্তর সম্পতি নিয়ে দখলের প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে একটি মামলা করেছেন। এরপর আমি দলিল প্রকাশ করে বক্তব্য দিয়েছি। এবং মেয়রকে বলেছি, আপনি আমার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। এরপর এক মাস অতিক্রম হলেও সে আমার বিরুদ্ধে আর মামলা করেননি। আইভী তথ্য গোপন করে ডেইলী স্টার পত্রিকায় বক্তব্য দিয়েছেন। এখন মেয়র আইভীর বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা হয়। উনি ক্ষমতা দিয়ে নিজেকে এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করার এবং সম্পত্তি গ্রাস করার মিশনে নেমেছেন। সর্বশেষ বলতে চাই ‘বেশি চুলকাইয়েন না’। যদি, ‘চুলকান’ পর্দার অর্ন্তরালের লোকটার নাম যথাসময়ে বলে দিবো।’