স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলখানাগুলোর ধারণ ক্ষমতার তিন-চারগুন মানুষ বেশি জেলখানায় রয়েছে। তার মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ মানুষ বিনাবিচারে বন্দি।
এরমধ্যে অনেক দোষী, দুর্ধর্ষ অপরাধী থাকলেও তাদের কোন বিচার হয়নি। তবে বন্দীদের মধ্যে একটি বড় অংশই কোন ধরণের অপরাধ না করেই জেলখানায় আটকে আছেন। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না।
রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জের রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মানবাধিকার, সংবিধান এবং বাংলাদেশ’ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারেরর সাবেক উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল এসব কথা বলেন।
রণদা প্রসাদ সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.মনীন্দ্র কুমার রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (আরপিএসইউটি) চেয়ারম্যান রাজীব প্রসাদ সাহা।
সুলতানা কামাল বলেন, ‘আমরা বিচার বহির্ভূত হত্যাকা- প্রত্যক্ষ করছি। মানুষের মৃতদেহ বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। কে বা কারা করছে সেটি আদালতের বিচার্য বিষয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন হত্যাকা-ের বিচার হয়না। এমন অবস্থায় পৌঁছে গেছে মানুষ এখন আর ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেনা।’
সুলতানা কামাল বলেন, সংখ্যালঘুরা, আদিবাসী বাঙালিরা, নারী-পুরুষ বিশেষ কর দলিত গোষ্ঠীর লোকেরা এখনও বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। কোন সভ্য সমাজে এমন বৈষম্য থাকতে থাকতে পারেনা।এটি অসংবিধানিক। এটি দূর করা প্রয়োজন। ‘বৈষম্য বিলোপ আইন’ তৈরির কথা থাকলেও সেটির বাস্তবায়ন এখনো করা হয়নি। সেটির কাজ আইনমন্ত্রণালয় পর্যন্ত গিয়েছিলো। যারা আইন প্রণয়নের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরা এখনো পর্যন্ত সেই আইনটি পাশ করছেননা।’
নানা বৈষম্য তৈরি হওয়ার কারণেই কোটা পদ্ধতি তৈরি হয়েছিলো বলে জানান সুলতানা কামাল। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, নারী, আদিবাসী যারা কোন কারণে পিছিয়ে পড়েছিলো তাদেরকে সামনে নিয়ে আসার জন্যই কোটা পদ্ধতি চালু হয়েছিলো। ঐ সমান সুযোগ সবাইকে দিতে হলে কিছুটা কোটা পদ্ধতি না হলে সম্ভবপর হবেনা। ঐতিহাসিকভাবে যারা পিছিয়ে পড়েছেন তাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে আসাতেও রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। তাই কোটা পদ্ধতি বাতিল করে দেয়াটাকে সমর্থন করা যায়না।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবির) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, দুর্নীতি দমনের ব্যাপারেও আমরা খারাপ অবস্থানে রয়েছি। দুর্নীতি দমনে আমরা কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সদস্য শ্রীমতি সাহা, কুমদিনী ওয়েল ফেয়ার ট্রাস্টের পরিচালক সম্পা সাহা, মহাবীর পতি, উপদেষ্টা আবু আলম মো.শহিদ খান, আরপি সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান ড.সুশিল কুমার দাশ, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন ড.মুসলেউদ্দিন, ফার্মেসী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড.তরিকুল ইসলাম, সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো.শাহারিয়ার পারভেজ, ইইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ হোসেন, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কাজী লতিফুর রেজা, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নাজমুল হাসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।