হাসপাতালে রোগীদের ভিড়, রোগ নিরাময়ে ভোগান্তী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: হাসপাতালে ভিড় করেছে শত শত রোগী। প্রত্যেকেই লাইনবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কষ্ট হলেও রোগ নিরাময় হবে ভেবে অপেক্ষা করছে তারা। তবে সকাল গড়িয়ে দুপুর হবার পালা, এরপরও দেখা মিলছে না ডাক্তারের।

মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নগরীর নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গিয়ে দেখা মিলে এমন দৃশ্য। হাসপাতালের করিডোরে ভিড় করেছে দূর থেকে আসা রোগীরা। এর মাঝে অনেক রোগীদের বারবার এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করতেও দেখা যায়। ছুটোছুটির কারণ জিজ্ঞাসায় কয়েকজন বলেন, রোগের জন্য হাসপাতালের বহির্বিভাগের কর্মকর্তারা ‘অমুক’ ডাক্তারের কথা বলেছে। সে ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হলে জবাব আসে, ‘এ রোগের চিকিৎসা আমি না, তমুক ডাক্তার করেন। সেখানে যান আপনি।’

এরকম পরিস্থিতিতে হাসপাতালের একতলা-দোতলায় ছুটছেন রোগী ও স্বজনরা। হচ্ছেন হয়রানির শিকার।
রোগীদের মধ্যে কথা হলো জুলেখা বেগমের (৫২) সাথে। বন্দর থেকে এসেছেন তিনি। আলাপকালে বলেন, এসেছিলাম অর্থপেডিক ডাক্তার এর সন্ধানে। কিন্তু বহির্বিভাগের কর্মচারীরা মেডিসিন ডাক্তার এর টিকেট কেটে দিয়েছে। এক ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ডাক্তার এর কক্ষে ঢুকলে ডাক্তার বলেন, দোতলায় এ রোগের ডাক্তার আছে, তার কাছে যান। তাই দোতলায় এসে অপেক্ষা করছি। চিকিৎসা অদৌ হবে কী তা জানি না।

হাসপাতালের একটু ভিতরে যেতেই দেখা মিললো জেনারাল হাসপাতাল এর দালাল নয়ণ মিয়ার (৩২) সাথে। রোগীদের মতে, ডাক্তারের কাছে রোগীদের পাঠাতে তদারকি করেন তিনি। তবে রোগীদের ঔষধ সরবরাহে কিংবা হাসপাতালে বেড জোগার করতেও পারেন তিনি । বিনিময়ে রোগীদের থেকে টাকা-কড়ি গ্রহণ করেন। রোগীদের অবস্থা নিয়ে কথা বলতে গেলে দৌড়ে পালিয়ে যান তিনি।
আবার, জ¦র ও সর্দি কাশি নিয়ে আশা এক রোগীর মা জানান, বাচ্চার তিন দিন যাবৎ জ্বর। তাই ডাক্তার এর কাছে এসেছি। কিন্তুু ডাক্তার আমার ছেলেকে ভালো ভাবে না দেখেই প্রেসক্রিপশনে ৩ টি পরীক্ষা লিখে দিয়েছেন। হাসপাতালে পরীক্ষা করার জন্য রয়েছে নানান রকম আধুনিক যন্ত্রপাতি। কিন্তু তা থাকা সত্ত্বে¡ও পরীক্ষা করতে বাইরে যেতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলতে গেলে ব্যাস্ততা দেখিয়ে এড়িয়ে যান তারা।
সর্বশেষে কথা হলো হাসপাতালে কর্তব্যরত আর.এম.ও আসাদুজ্জামানের সাথে। রোগীদের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, টিকেট কাউন্টার এর লোক গুলোতো আর ডাক্তার না, যে রোগ বুঝে ডাক্তার সাজেস্ট করবে। এজন্যই বড় ডাক্তার গুলোর কাছে পাঠায় তারা। আর তারা রোগাীদের সঠিক ডাক্তারের কাছে যাবার পরামর্শ দেন।

তিনি আরও বলেন, মানুষের তো একশ রকম রোগ হয়। সব রোগের চিকিৎসা বা পরীক্ষা সরকারি হাসপাতালে নেই।
জ¦র-সর্দির পরীক্ষার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, মানুষের ৪৪ রকম জ¦র হয় ২২ রকম পরীক্ষার ব্যাবস্থা আছে এ হাসাপাতালে । কিন্তু বাকিগুলো নেই বলে বাইরে যেতে হয়।