অবন্তী কালারের শ্রমিকদের টানা তিনদিনের বিক্ষোভ

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সরকারের গেজেট মোতাবেক মজুরি না দেওয়া, অবৈধ ছাটাই ও শ্রমিকদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে টানা তিনদিন যাবত বিক্ষোভ করছে ক্রোনী গ্রুপের অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের শ্রমিকরা। তবে, প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ বলছে ‘তারা আমাদের শ্রমিক নয়’।

রবিবার (৬জানুয়ারী) তৃতীয় দিনের কর্মসূচি অনুযায়ী নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে কারখানাটির কয়েকশ শ্রমিক। এছাড়া মালিক সংগঠন বিকেএমইএ এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে ৭ দফা দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে তারা। তাদের দাবি না মেনে নেয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলেও জানান আন্দোলনরত শ্রমিকরা।

এদিকে টানা তিনদিন যাবত আন্দোলন চালালেও আন্দোলনরত শ্রমিকরা অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের শ্রমিক নয় বলে দাবি করেছেন কারখানারটির মালিকপক্ষ। অবন্তী কালার টেক্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আসলাম সানি বলেন, যারা আন্দোলন করছে তারা আমার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক নয়। আমার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানের ভিতরে কাজ করছে। তাদের সরকারের গেজেট মোতাবেক মজুরি দেয়া হচ্ছে।

শ্রমিকদের অবৈধভাবে ছাটাই করা হয়েছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, সম্প্রতি ঘটে যাওয়া শ্রমিক অসন্তোষের সময় সহিংসতার কারণে কিছু শ্রমিকদের ছাটাই করা হয়েছিল। এ আন্দোলনে তারা হতে পারে। আমি কারো বিরুদ্ধে মামলা করিনি। আর যারা আমার শ্রমিক নয় আমি তাদের অভিযোগ কেন শুনবো?

এদিকে রবিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় তৃতীয় দিনের মতো চাষাড়া শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করে শ্রমিকরা। এরপর প্রতিবাদ মিছিল বের করে তা নগরীর দুই নং রেল গেট চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় পরিদর্শন অধিদপ্তর ও মালিক সংগঠন বিকেএমইএতে ৭ দফা দাবি উল্লেখ করে স্মারকলিপি দেন তারা।

এর আগে চাষাড়া শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শ্রমিকরা। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা দুলাল সাহা, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলা সভাপতি এমএ শাহিন, জেলা গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, জেলা ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি শুভদেব, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস জামান।

বিক্ষোভ সমাবেশে তরিকুল সুজন বলেন, আমরা গতকালও স্পষ্টভাবে বলেছি শ্রমিকরা কোনো অন্যায্য দাবি নিয়ে আসেনি। শ্রমিকরা কাজ করেছে এখন তাদের ন্যায্য মজুরি চায়। শ্রমিকরা আলোচনায় যেতে চায়, কাজে ফিরতে চায়। মনে রাখবেন শ্রমিকদের বোকা ভেবে কোন ধরনের সুযোগ যদি নেন তাহলে সেটার ফলাফল ভালো হবে না।

ইকবাল হোসেন বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে শ্রমিকদের গ্রেপ্তার করিয়ে দিচ্ছে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। বাংলাদেশে এমন কোনো জেলখানা নেই যেখানে ৪০ লাখ শ্রমিকদের জায়গা দিতে পারে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করবো। আর যদি বাঁধ ভেঙ্গে যায় তাহলে শ্রমিক শ্রেণিকে আর কোনোভাইে আটকানো যাবে না।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক ফয়জুর রহমান মাসুম শ্রমিকদের সান্তনা দিয়ে বলেন, উল্লেখিত ৭টি দাবির মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী যৌক্তিক যে দাবি রয়েছে সেগুলো সমাধানের জন্য মালিক পক্ষের সঙ্গে আমরা আলোচনায় বসবো। যতটুকু সম্ভব সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করবো।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments