এনসিসি নির্বাচন: ‘হাতপাখা’র ইশতেহারে নগরবাসীর জন্য যা আছে…

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ‘নির্বাচনী ইশতেহার’ তুলে ধরেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ।

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান থেকে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ২৭ দফা কর্মসূচি সম্বলিত ইশতেহার নগরবাসীর উদ্দেশ্যে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হয়।

লাইভ নারায়ণগঞ্জের পাঠকদের উদ্দেশ্যে ইশতেহার তুলে ধরা হলো:

১. নগরবাসীর জনস্বাস্থ্য সুরক্ষা:
সিটি কর্পোরেশন এলাকার জনগণের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন করা কর্পোরেশন কতৃপক্ষের দায়িত্ব। এতদুদ্দেশ্যে অস্বাস্থ্যকর ইমারতসমূহ ও ময়লা আবর্জনা অপসারণে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ, পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট স্থাপন, মৃত্যু, বিবাহ রেজিষ্ট্রি অনলাইনকরণ, সংক্রামক ব্যাধি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করতে বিশেষজ্ঞ টিম গঠনপূর্বক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান, অঞ্চলভিত্তিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মান, মাতৃসদন, হাসপাতাল, ডিসপেনসারী স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।

২. নগরবাসীর পানি সরবরাহ ও পানি নিষ্কাশন:
নগরীর সর্বত্রই বিশুদ্ধ পানির ঘাটতি। তাই নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নলক‚প স্থাপন করা হবে। বর্জ্য ও পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হবে যাতে করে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর হয় এবং নগরী দূষণমুক্ত থাকে।

৩. বাজার ব্যবস্থা আধুনিকায়ন:
নগরীর অভ্যন্তরে বিদ্যমান বাজারগুলো অপরিষ্কার এবং অব্যবস্থাপনার কারণে যানজট, পচাঁ আবর্জনা জমে এবং যার কারণে দূর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। এ ব্যবস্থার উত্তরণকল্পে নগরীর হাট-বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হবে।

৪. নগর পরিকল্পনা:
নারায়ণগঞ্জ সিটি একটি জনবহুল শহর। নগরীর নাগরিকদের নিকট সকল ধরণের নাগরিক সুবিধা দিতে বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে নগর অবকাঠামোগত উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা নেওয়া হবে। কর্পোরেশন এলাকার মধ্যে বেদখলকৃত জমি উদ্ধার এবং কোনো স্থাপনা এবং ইমারত জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে তা অপসারনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

৫. রাস্তাঘাট নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ:
সিটি কর্পোরেশন নগরীর অধিবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট নির্মাণ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, সড়কের প্রধান সড়কগুলোতে যানজট নিরসনকল্পে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত ট্রাফিক কর্মী নিয়োগ করা হবে।

৬. জননিরাপত্তা বিধান:
নগরীর নাগরিকের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে অগ্নিনিরোধ ও অগ্নিনির্বাপনের জন্য নিজস্ব দমকল বাহিনী গঠন, দুর্ভিক্ষ কবলিত এলাকায় ত্রাণের ব্যবস্থা করা, গোরস্থান ও শশ্মানকে আধুনিকায়ন করা হবে।

৭. বৃক্ষরোপন, পার্ক, উদ্যান ও বনায়ন কর্মসূচী:
নগরীতে বৃক্ষরোপন ও সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কগুলোতে বৃক্ষ রোপনের মাধ্যমে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে।

৮. শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ তৈরী:
শিক্ষা একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার। সকলের অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নিম্ন আয়ের পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার সুযোগ দিতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে। যেখানে নিম্ন আয়ের জনগণ তাদে সন্তানদের বিনামূল্যে শিক্ষা গ্রহনের সুযোগ পাবে। গোটা নগরিতে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরী করা হবে।

৯. সাংস্কৃতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন:
সুস্থ সংস্কৃতি বিকাশ ও নগরীর ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য সুস্থ সংস্কৃতি বিষয়ক বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন, জনগণের সাথে নগরীর সম্পর্ক দৃঢ় রাখার জন্য তথ্যকেন্দ্র স্থাপন, নিজস্ব রেডিও ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা হবে। নাগরিকের মেধা বিকাশ ও জ্ঞানানুরাগী করা এবং কিশোর কিশোরীদের অসামাজিক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে খেলাধূলার জন্য খেলার মাঠ স্থাপন এবং প্রত্যেক এলাকায় পাঠাগার স্থাপন।

১০. জনকল্যানমূলক কাজ:
নগরীর দুস্থদের জন্য জনকল্যানকেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র এবং এতিমখানা স্থাপন করা হবে। মৃত নিঃস্ব ব্যক্তিদের মৃতদেহ দাফন বা দাহের ব্যবস্থা করা হবে। ভিক্ষাবৃত্তি, পতিতাবৃত্তি, জুয়া মাদক ইত্যাদি প্রতিরোধের জন্য প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় প্রতিরোধ কমিটি গঠনপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

১১. ফুটপাত সম্প্রসারণ ও হকার পূনর্বাসন প্রকল্প:
নগরীর আওতাভূক্ত এলাকায় নগরবাসীর সুবিধার্থে ফুটপাত স্থাপন ও সম্প্রসারণ করা হবে। শহরের ছিন্নমূল হকাররাও মানুষ; তাদেরও অধিকার রয়েছে দেশের সুবিধা গ্রহনের। সেই সুবাধে যেনো তেনোভাবে হকারদের উচ্ছেদ না করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করত: হকার পূনর্বাসন করা হবে।

১২. শুধু দুর্নীতি দমন নয়, দুর্নীতির মূলোৎপাটন কর্মসূচি গ্রহণ :
নগর উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হল দুর্নীতি। দুর্নীতিকে পাকাপোক্ত করার জন্য সন্ত্রাস, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয় নেয়া হয়। অপরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ এবং সে অনুযায়ী কর্মকাণ্ড পরিচালনাও দুর্নীতির একটি হাতিয়ার। অপরিকল্পিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমেও জনগণের আমানতের খেয়ানত করা হয়। তাই সর্বাগ্রে আমাদের কাজ হবে দুর্নীতি নির্মূলে কর্মসূচি গ্রহণ করা। স্বজনপ্রীতি ও দলীয়করণের মূলোৎপাটন করা। এ লক্ষ্যে গৃহীত পদক্ষেপসমূহ উত্থাপন করা হলো :
ক. সিটি কর্পোরেশনে সংঘটিত দুর্নীতি, টেন্ডারবাজী, স্বজনপ্রীতি ও দলীয় অশুভ প্রভাব-প্রতিপত্তির বিরুদ্ধে নগরবাসীকে সচেতন করা হবে। এ কাজে সকল প্রচারযন্ত্র, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, মসজিদের ইমাম, আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখসহ অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের সমন্বিত ভ‚মিকা পালনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
খ. নগরবাসীর অভ্যন্তরীন মূল্যবোধকে উন্নত করার জন্য ব্যবহারিক জীবনে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার জন্য জনগণকে উৎসাহিত করা হবে। কারণ একজন সত্যিকারের ধার্মিক মানুষ কখনও অন্যের ক্ষতি তো দূরের কথা দেশ ও মানুষের অকল্যাণ চিন্তাও করতে পারে না। দুর্নীতি ও সন্ত্রাসসহ কোন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় না।
গ. সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে সততা ও যোগ্যতার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হবে এবং যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রশংসাপত্রসহ পুরস্কৃত করা হবে।
ঘ. সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তা, কর্মচারী যদি কোন দুর্নীতি বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়, তবে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগতভাবে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঙ. সিটি কর্পোরেশনের ক্ষমতাকে ব্যাপক বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে।
চ. ‘ওয়ান স্টেপ সেবা প্রদান’ বা এক টেবিলে গিয়ে যাতে লোকজন সবগুলো কাজ সুসম্পন্ন করতে পারেন, সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ছ. অফিস পরিচালনায় আমূল পরিবর্তন আনা হবে। নিম্ন করণিক থেকে বড় কর্মকর্তা কেউই নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে ফাইল বা কার্যাদেশ ধরে রাখতে পারবেন না।
জ. জনসাধারণের কাজকর্ম সরল ও সহজ করা হবে। অহেতুক সময় ক্ষেপন যাতে না করতে হয়, তার জন্য ন্যূনতম কাগজপত্রের ভিত্তিতে অফিস আদেশ জারির ব্যবস্থা করা হবে।
ঝ. দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিটি অফিসে ‘অভিযোগ বাক্স’ স্থাপন করা হবে। অভিযোগপত্রগুলো দ্রæত তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঞ. গোপনীয়ভাবে দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোরদের খোঁজখবর নিয়ে প্রাথমিকভাবে চারিত্রিক সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। সংশোধিত না হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ট. অনলাইন ব্যবস্থা আরো উন্নত করা হবে।

১৩. ভেজালমুক্ত খাদ্য ও ইনসাফপূর্ণ বাজার নিয়ন্ত্রন:
খাদ্য মানুষের বেঁচে থাকার জন্য একান্ত অপরিহার্য; যদি সে খাদ্য ভেজালমুক্ত হয়। ভেজালযুক্ত খাদ্য বিভিন্ন রোগের কারণই শুধু নয়; জীবনসংহারীও বটে। এজন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটিকে ভেজালমুক্ত করা হবে। এছাড়াও ইনসাফভিত্তিক বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা হবে। যাতে ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়ই লাভবান হয়।

১৪. শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা :
শ্রমিকদের অবহেলা, অসম্মান করলে এবং তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখলে কোন দেশ, কোন অঞ্চল এবং কোন শহর কখনো উন্নতি লাভ করতে পারে না। এ জন্য শ্রমিকদের সাথে সুন্দর ব্যবহারের আচরণবিধি করা হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার যাতে ব্যাহত না হয়, এ ব্যাপারেও একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। শ্রমিকদের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করা হবে।

১৫. নারী জাতির মর্যাদা সমুন্নত করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান :
মায়ের জাতি নারী সমাজের মর্যাদা ক্ষুণ্নকারী যেমন- নারী নির্যাতন, নারী অপহরণ, এসিড নিক্ষেপসহ এরূপ জঘন্য কর্মকাণ্ডসমূহ কঠোর হস্তে দমন করা হবে। যৌতুকমুক্ত নারায়ণগঞ্জ সিটি ঘোষণা করা হবে। মায়ের জাতি নারী সমাজের সম্মান-মর্যাদা রক্ষার্থে বিজ্ঞাপনের নামে নারীদের অশোভনীয়-অশ্লীল প্রদর্শনী বন্ধ করা হবে। লোকাল বাসে ১০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে। এছাড়া মহিলাদের জন্য আলাদা বাসের সুব্যবস্থা করা হবে। নারীশিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্বতন্ত্র মহিলা বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা, মেডিকেল কলেজ ও টেকনিক্যাল কলেজ নির্মাণ করা হবে।

১৬. গরীব-দুঃখী অসহায় ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ব্যাংক :
পঙ্গু ও অক্ষম ভিক্ষুকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে ভিক্ষুকমুক্ত মহানগরী ঘোষণা করা হবে। স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রিক্সা, ভ্যান, টেম্পু, সিএনজি ও ট্যাক্সি চালকদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে তাঁদেরকে মালিকানায় উন্নীত করা হবে। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকেও এ প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হবে। সাথে সাথে বেকারদের কর্মসংস্থান ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করণের লক্ষ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

১৭. যানজট নিরসন :
যানজট নিরসনে পুলিশ-প্রশাসনের সাথে সমন্বয় সাধন করে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন করা হবে। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি তোলারাম কলেজের শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে রাস্তা পারাপারের জন্য ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে।

১৮. সংখ্যালঘুদের সার্বিক অধিকার নিশ্চিতকরণ :
সংখ্যালঘুদের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। তাঁদের জানমাল ও সম্মানের যথাযথ নিরাপত্তা দেয়া হবে। তাঁরা যাতে শঙ্কামুক্ত জীবনযাপন করতে পারেন, তার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

১৯. ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা :
সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সকল ধরণের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক হানাহানি ও সংঘর্ষ নিরসনকল্পে সকল ধর্ম-বর্ণ ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে পারস্পরিক সহাবস্থান সম্প্রীতি-সৌহার্দ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যুগোপযোগী ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ লক্ষ্যে সকল ধর্মীয় ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে যৌথ বৈঠকের মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে যে কোন প্রকার সাম্প্রদায়িক ও রাজনৈতিক উস্কানি ও সংঘাত বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

২০. মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ:
সুস্বাস্থ্য, সুশিক্ষা ও চরিত্রের উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যমে আজকের শিশুরা যাতে আগামীতে দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে এবং দেশের উন্নয়নে বলিষ্ঠ অবদান রাখতে পারে, সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। মায়েরা যাতে সহজে সুচিকিৎসা পেতে পারেন, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

২১. নগরীর জলাবদ্ধতা দূরিকরণ :
একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে যায়। এজন্য নগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাই দায়ী। দেশী-বিদেশী নগর বিশেষজ্ঞ এবং প্রকৌশলীদের সমন্বয়ে নগরীর জলাবদ্ধতা দূরিকরণে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

২২. পথিক এবং ভ্রাম্যমান মানুষের জন্য নতুন ১০০০ স্যানিটারী টয়লেট নির্মাণ করা :
ভাসমান এবং ভ্রাম্যমান মানুষেরা যাতে রাস্তা-ঘাটে পায়খানা-প্রসাব করে পরিবেশ নোংরা করতে না পারে এবং ভ্রাম্যমান ও পথিকদের সুবিধার্থে নতুন ১০০০ স্যানিটারী টয়লেট নির্মাণ করা হবে। যা সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্ববধানে পরিচালিত হবে।

২৩. ৩০% হোল্ডিং ট্যাক্স কমানো হবে :
বাড়ীর মালিক ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সু-সম্পর্ক স্থাপনের জন্য একটি নীতিমালা করা হবে। যাতে উভয় পক্ষের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। বাসা ভাড়া সহনশীলাবস্থায় আনয়নের জন্য বাসাবাড়ীর হোল্ডিং ট্যাক্স ৩০% কমানো হবে।

২৪. প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা :
খেলা-ধুলার মানোন্নয়নের জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে ১টি করে উন্নতমানের খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা হবে।

২৫. ধুলা-ধোঁয়া, মশা, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনের লক্ষ্যে টাস্ক ফোর্স গঠন :
ধুলা, ধোঁয়া, মশা, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনের লক্ষ্যে প্রতিটি বিষয়ে একটি করে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হবে। যাতে তড়িৎ গতিতে উপরোক্ত সমস্যাগুলো নিরসন করা যায়। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের সাথে সমন্বিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

২৬. ক্ষুদে টোকাইদের পুনর্বাসনকেন্দ্র নির্মাণ :
ক্ষুদে টোকাইদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য ফ্রি শিক্ষাসহ বিভিন্ন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।

২৭. প্রতিবন্ধীদের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান :
প্রতিবন্ধী মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই অসহায় থাকে। তাদের সাহায্য এবং সহযোগিতায় এগিয়ে আসা প্রত্যেকের দরকার। এলক্ষে যানবাহনে এবং রাস্তা-ঘাটে চলাচলে সবাই যাতে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসে সে ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষে ব্যপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে। প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্ব দেয়া হবে।

হাতপাখা মার্কার প্রার্থী প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, একটি আদর্শ নগর বিনির্মানে, জনগণের নিকট সেবা পৌছে দিতে, নাগরিক সুবিধাপ্রাপ্তি নিশ্চিতকরণে আমার প্রধান কর্তব্য বলে মনে করবো। সেই সুবাধে এ বাস্তবতা সামনে রেখেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর পক্ষে আমি ২৭ দফা কর্মসূচি সম্বলিত নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছি এবং দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি, নির্বাচনী ইশতেহারে বর্ণিত কর্মসূচীসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এবং সকলের সহযোগিতা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে একটি উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানবিক শান্তির নগরী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করব, ইনশাআল্লাহ্।