এবারও ডিএনডিতে জলাবদ্ধতায় দীর্ঘ ভোগান্তির আশঙ্কা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: গত বছরের জলাবদ্ধতার তিক্ত অভিজ্ঞতা নারায়ণগঞ্জবাসী এখনো ভোলেননি। এবারও আগাম বর্ষার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সরকার বলেছিল, এ বছর জলাবদ্ধতা থাকবে না। কিন্তু জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনডির কাজ এখনো শেষ হয়নি। ফলে বর্ষার আগে জলাবদ্ধতার দীর্ঘ ভোগান্তির আশঙ্কা থাকছেই।

চলতি মাসের প্রথম দিকে নারায়ণগঞ্জে বেশ বৃষ্টিপাত হয়। এই বৃষ্টিতে ডিএনডির ফতুল্লার বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী
জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর সঙ্গে কাদাপানিতে অনেক এলাকার সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এছাড়া শিল্পনগরী
বিসিকের অবস্থাও খুব ভয়াভহ হয় । এলাকার বাসিন্দারা তীব্র ভোগান্তিতে পড়েন।

প্রতিবছর মে মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় বর্ষা। তবে গত বছর এপ্রিলের শেষ থেকেই আগাম বর্ষা শুরু হয়ে
গিয়েছিলো। ছয় মাসের বেশি স্থায়ী বর্ষায় ডিএনডির বেশির ভাগ এলাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রূপ নেয়। এবারও সেই
সংকেত পাওয়া যাচ্ছে।

সংকেতকে বিশ্বাসে রূপ দিয়েছে ডিএনডির উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল জাব্বার। তার দাবি, ‘গতবারের মতো ভারী
বর্ষণ হলে নগরবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হবে। মূল বর্ষা শুরুর আগে কর্তৃপক্ষ কাজ করে কিছুটা ভোগান্তি কমাতে পারে।
কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগে জলাবদ্ধতার সমাধান কোন ভাবেই সম্ভব না।’

আব্দুল জাব্বার আরো বলেন, ১২৮ কিউসেকের ৫০ বছরের পুরন ৪টি পানির পাম্প রয়েছে। সে গুলোর কার্য ক্ষমতা কমে
যাওয়ায় সব মিলিয়ে ৩০০ কিউসেক পানি উঠাতে সক্ষম। এছাড়া ছোট যে ২২টি পাম্প রয়েছে, এর মধ্যে ১০টি পাম্প
পুরোপুরি বিকল। যে ১২টি রয়েছে, সেগুলোও আই ওয়াস ছাড়া আর কিছু নয়। অন্তত ৩২০০ কিউসেক পানি ডেলিভারি
দিতে পারলে অত্র এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব।

তার বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা যায় সরেজমিনে ঘুরে। ফতুল্লার পিলকুনি, জালকুড়িসহ পশ্চিমপাড়ায় এখনই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি
হয়ে আছে। আর দুই একদিন বৃষ্টিতে বাসা বাড়িতেও উঠতে পারে পানি। এছাড়া তক্কারমাঠ থেকে স্টেডিয়াম সড়ক,
রামারবাগ, লালখাঁ ও শিয়াচরের বিভিন্ন গলি কাদাপানিতে একাকার হয়ে আছে। চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বেশ কিছু
এলাকা।

তবে আশার কথা হলো ডিএনডি এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়ে পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামিম জানিয়েছেন,
ডিএনডির ১২টি পাম্প ৩০ এপ্রিলের মধ্যে চালু হবে।

প্রসঙ্গত, রাজউক এবং ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ৫৫৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ
শুরু করেছে সরকার। প্রকল্পটির আওতায় দুটি নতুন পাম্পহাউস, ও ৫টি পাম্পস্টেশন বসানোর কথা রয়েছে। এসব
পাম্পহাউস ও স্টেশন বসানোর পর শুরুর কথা রয়েছে বাঁধের ভেতরে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ খাল সংস্কারের কাজ।