কেঁদে ফিরতে হলো মৃত পুলিশ সদস্যের স্ত্রী সেলিনাকে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নেই থাকার জন্য কোন ঘর; তাই স্বামী পুলিশ সদস্য জাকির হোসেনের মৃত্যুর স্মৃতি আকড়ে মানিকগঞ্জেই বসবাস করছেন মোসা. সেলিনা বেগম। পেনশনের পাওয়া অল্প কিছু টাকাতেই বাড়ি ভাড়া, ৩ সন্তানের লেখাপড়া আর সংসারের সকল খরচ বহন করতে হয় তাকে।

পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’তে মরহুমের উত্তরধিকারী হিসেবে ডাক পেয়ে বহু স্বপ্ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জে ছুটে আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেদে ফেরতে হয় এ নারীকে।

স্বামী পুলিশ সদস্য জাকির হোসেনের মৃত্যুতে সম্মাননা দেওয়ার পর কান্না জড়িত কন্ঠে মোসা. সেলিনা বেগম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, স্বামী মৃত্যুর পর খুবই কষ্টে চলতে হচ্ছে। সরকার রেশনও দেয় না, পেনশনের মাত্র ৯ হাজার টাকা দিয়ে পরিবারের সকল খরচ চালাতে হয়। আজ যে আমি মানিকগঞ্জ থেকে এখানে (নারায়ণগঞ্জ) এসেছি, তার জন্য ৫ হাজার টাকা ঋণ করতে হয়েছে। আমার স্বামী দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে মারা গেছে, তাই অনেক স্বপ্ন নিয়ে এসে ছিলাম। বছরে একদিন ডেকে গাড়ি ভাড়াতো দুরে থাক, মাত্র ২ হাজার টাকা আর একটি চাদর ধরিয়ে দিয়েছে। তাই চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সাল থেকে প্রতিবছর ১ মার্চ পালিত হয়ে আসছে ‘পুলিশ মেমোরিয়াল ডে’। এদিনটিতে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অকাতরে মূল্যবান জীবন উত্সর্গ করা বীর শহীদদের। খোঁজ খবর নেওয়া হয় পরিবার পরিজনকেও। এমনই বীর শহীদদের মধ্যে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলার ২ সন্তান; এদের মধ্যে একজন সিদ্ধিরগঞ্জ আদমজীনগরের জাকির হোসেন। ২০১৬ সালে ১২ জুন ভোর সাড়ে ৬টা মানিকগঞ্জ জেলায় দায়িত্ব পালন কালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মালবাহী ট্রাকের চাপায় গুরুতর আহত হন । পরে পুলিশ সদস্যরা দ্রুত মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বিধবা মোসা. সেলিনা বেগম’র ভাষ্য মতে, ‘আমার স্বামীতো রাষ্ট্রীয় কাজ করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে। আজকে বহু আশা করে এসেছি, ভেবে ছিলাম অন্তত ৫০ হাজার টাকা সরকার দিবে। কিন্তু সেখানে গাড়ি ভাড়াতো দুরে থাক, মাত্র ২ হাজার টাকা দিয়েছে আর একটি পুলিশের চাদর দিয়েছে। আমরা কি পেয়েছি? আমাদের কি দিয়েছে সরকার? কি দিয়েছে শেখ হাসিনা?’

এ বিষয়টি নিয়ে জেলা পুলিশের মিডিয়া অফিসার সাজ্জাদ রোমন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, পুলিশ সুপার স্যার নিহতের পরিবারের সদস্যদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন। এছাড়া ভালো খাবার দাওয়ার ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়া তাদের সুবিদা, অসুবিদা গুলো লিখিত আকারে জানালে আমরা হেট কোয়াটারে উপস্থাপন করতে পারবো। পরে হেট কোয়াটারের দেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments