লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট ও চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রয়াত কমরেড জাহেদুল হক মিলু’র ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকাল ৫ টায় বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে দলের জেলা কার্যালয়ে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ। বাসদ জেলা কমিটির আহ্বায়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা কমিটির সদস্যসচিব আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সেলিম মাহমুদ, বাসদ সোনারগাঁ উপজেলার সমন্বয়ক বেলায়েত হোসেন, ফতুল্লা থানার আহ্বায়ক এম এ মিল্টন, জেলা কমিটির সদস্য এস এম কাদির, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলার সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আক্তার, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জেলার আহ্বায়ক প্রদীপ সরকার।
কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, এদেশের বিপ্লবী আন্দোলনে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র কমরেড জাহেদুল হক মিলু। কমরেড মিলু ছিলেন আমৃত্যু বিপ্লবী। দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যুক্ত থেকে সারা দেশে বিশেষত উত্তরবঙ্গে আমাদের দল ও মেহনতি মানুষের সংগ্রামকে বিকশিত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। দল ও বিপ্লবের স্বার্থই তার কাছে ছিল সর্বাগ্রে। রাজনৈতিক সংগ্রাম করতে গিয়ে নানা সময়ে শাসকদের নানা আক্রমণ, নির্যাতন-নিপীড়ন তিনি যেমনি হাসিমুখে বরণ করেছেন তেমনি দলের মধ্যেও নানা সমালোচনাকে তিনি খোলা মনে গ্রহণ করে নিজেকে প্রতি মুহুর্তে একজন সমাজ পরিবর্তনের সৈনিক হিসেবে গড়ে তোলার সংগ্রাম করেছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি এই লড়াইয়ে ছিলেন অবিচল। সকল রকমের অহমিকা ও আত্মম্ভরিতা থেকে মুক্ত কমরেড মিলুর চরিত্র এদেশের তরুণ বিপ্লবীদের জন্য জ্বাজ্জল্যমান শিক্ষা হয়ে আছে। নিজের স্বার্থকে কীভাবে বিপ্লবী আন্দোলনের সাথে একাত্ম করে দেয়া যায় কমরেড মিলু তার অনন্য উদাহরণ ।
নিখিল দাস বলেন, মার্কসবাদী দর্শনকে জীবনদর্শন হিসেবে ধারণ করে শোষিত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে তাদের অবদান আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। আজ পুঁজিবাদী শোষণ, ভোগবাদের সমাজ মানসিকতা ও সাম্রাজ্যবাদী লুণ্ঠন, দুর্নীতি-লুটপাট এবং ক্ষমতাসীনদের ফ্যাসিবাদী আক্রমণ যেমন জনজীবনকে দুর্দশায় নিপতিত করেছে তার চেয়েও ভয়ংকর আক্রমণ নেমেছে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও নৈতিক মূল্যবোধের উপর। এই অসহনীয় অবস্থা থেকে মানুষের মুক্তির লড়াইয়ে কমরড জাহেদুল হক মিলুর সংগ্রাম আমাদেরকে পথ দেখাবে।
আবু নাঈম খান বিপ্লব বলেন, শ্রমজীবী মানুষের স্বার্থকে প্রতিষ্ঠা করতে কমরেড জাহেদুল হক মিলু আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আজও শ্রমিকরা বাঁচার মতো ন্যূনতম মজুরি পাচ্ছে না। গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার থেকে শ্রমিকেরা বঞ্চিত। শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের মুক্তির সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে জয়যুক্ত করার মাধ্যমেই প্রয়াত কমরেড মিলুকে যথার্থ শ্রদ্ধা ও সম্মান
জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৩ জুন কমরেড মিলু সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে দীর্ঘ এক মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থেকে মৃত্যুবরণ করেন।