লাইভ নারায়ণগঞ্জ : নগরীর নিতাইগঞ্জে খাদ্য গুদামে বিস্ফোরণ থেকে আগুন লেগেছে। এতে দগ্ধ হয়ে একজন নিহতসহ ৯জন আহত হয়েছে। শনিবার (১৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯ টায় ডালপট্টি এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক ফখর উদ্দিন আহাম্মদ।
নিহতের নাম আওলাদ হোসেন। সে ডালপট্টি এলাকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এছাড়া আহতা হলেন, দিনমজুর হযরত আলী (৪০), মোহাম্মদ হোসেন (৪০) , মুদি দোকানের কর্মচারি রবি দত্ত (৪০), রাজন, সরদার, জাহাঙ্গীর ও সেন্টু। এছাড়া বাকিদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতদের নাম তাৎক্ষনিকভাবে জানা যায়নি।
এদিকে, ফায়ার সার্ভিস জানায়, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে ফায়ার সার্ভিস। যেকোন সময় ভবনটি ধ্বসে পড়তে পারে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী এ প্রতিবেদককে জানান, আমরা পাশের একটি গোডাউনে কাজ করছিলাম, হঠাৎ বিকট এক শব্দে শুনে দৌড়ে আসি। এসে দেখি অনেক ধোয়া ছড়িয়ে যায়।
নিতাইগঞ্জে কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, আহতরা বাঁচার জন্য ছোটাছুটি করছে। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটা রিক্সাও ছিলো, পরে ঠেলা গাড়িতেই হাসপাতালে নিয়ে যাই।
ঘটনাস্থলে আসা নিতাইগঞ্জ কমার্শিয়াল ব্যাংক উপ-শাখার ইনচার্জ সমির কুমার ঘোষ বলেন, এই ভবনটি অনেক পুরাতন তবুও এখানে ব্যবসা চলমান ছিলো। সংশ্লিষ্ট কর্মতাদের আগে থেকেই এটা তদারকি করা উচিৎ ছিলো। অবশ্যই এটাতে গাফলতি আছে, দায়িত্বের অবহেলা আছে।
ফায়ার সার্ভিসের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারি উপ পরিচালক ফখরুদ্দিন জানান, আনুমানিক সকাল ৯টায় নিতাইগঞ্জ ২তলা একটি ভবনে বিষ্ফোরণ হয়েছে। ভবনের পেছনের অংশ ভেঙ্গে গিয়েছে এবং অগ্নিকান্ড হয়েছে। আমাদের নারায়ণগঞ্জে মোট ৭টি ইউনিট কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুন আর বাড়ার সম্ভাবনা নাই। এই ঘটনায় মোট ৯জন আহত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ভবনটি এমন ভাবে আছে এখন আমাদের ফায়ার সার্ভিসের লোকজন যাওয়া খুব ঝুকিঁপূর্ণ। আমরা সাবধানতা নিয়ে কাজ করছি। এখনো কি থেকে বিষ্ফোরণ হয়েছে সেটি বুঝা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছি গ্যাসের জমাট লাইনের পাইপ ছিলো ভবটিতে। বাকিটা তদন্ত সাপেক্ষ বলা যাবে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, আমরা আনুমানিক সকাল সাড়ে ৯টায় জানতে পারি জরাঝীর্ণ ভবনে আগুন লেগেছে। আমরা জানতে পারি এটা চাল, ডাল ও আটার গোডাউন ছিলো। এখানে যারা কাজ করতো ও গদ্ধ হয়েছে তাদের মধ্যে ১জন মারা গেছে, আহত আছে আরও ৮ জন। ফায়ার সার্ভিস ও জেলা পুলিশ কাজ করছে, ফারদার যাতে আর কোন সমস্যা না হয় সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আপাতত ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এখান থেকে উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। জনসাধারণের এখানে প্রবেশ নিষেধ।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক সার্জন আব্দুল কাইয়ুম জানান, ফায়ার সার্ভিস মার্ফত আমাদের ইমার্জেন্সিতে ৪জন ভর্তি হয়েছিলো। এর মধ্যে একজন রোগীর হাত ভেঙ্গে গিয়েছে, কিন্তু ২জনের অবস্থা খুব আশঙ্কাজনক। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটে পাঠিয়েছি। কোন রোগীর সাথে কোন স্বজন বা কেউ ছিলো না। আমরা হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে তাদের ঢাকায় পাঠিয়েছি। আরও কোন রোগী আসলে তাদেরও আমরা চিকিৎসা দিতে পারবো।