আড়াইহাজার করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আড়াইহাজার থানায় ঢুকে পুলিশকে শাসানোসহ মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাত ৯টার দিকে আড়াইহাজার থানার ভেতর এ ঘটনা ঘটে৷ আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ ৫/৬জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ উঠে। গণমাধ্যমে আসা মোবাইলে ধারণকৃত ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ছাত্রলীগ কর্মীরা প্রথমে এএসআই শরিফ ও পরে এসআই ফায়জুর রহমানের সঙ্গে প্রচন্ড বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। ভিডিওতে ছাত্রলীগ কর্মীকে আঙুল উচিয়ে পুলিশকে শাসাতে দেখা যায়৷এসআই মোস্তাফিজ, এসআই হেলাল, এএসআই আউয়াল ও এএসআই মোস্তফা এ সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (২৯ মার্চ) তখন রাত ৯টা। থানায় প্রবেশ করেন আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল-আমিন। সাথে ছাত্রলীগের ৫/৬জন নেতাকর্মী।এসময় জিডি সংক্রান্ত একটি বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশ সদস্যদের তর্কবিতর্ক শুরু হয়৷ এক পর্যায়ে উত্তেজিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশকে শাসায় এবং মেরে ফেলারও হুমকি দেয়৷
ওই রাতে ডিউটি অফিসারের দায়িত্বে থাকা এএসআই শরিফ জানান, রাতে আল-আমিন একটি জিডি খোঁজ করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি নিজেই জিডি লিপিবদ্ধের খাতা হাতে নিয়ে দেখার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দেই৷ তখনই বাকবিতন্ডায় শুরু।
এদিকে গণমাধ্যম জানতে চাইলে ঘটনার বিষয়ে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, আমি তখন থানাতে ছিলাম না৷ ঢাকাতে ডিআইজি সাহেবের সাথে মিটিংয়ের জন্য বিকেল ৪টাতে চলে গিয়েছিলাম৷ তখন দায়িত্বে ছিলেন পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম৷ আমি শুনেছি কথা কাটাকাটি হয়েছে৷ এক কথা দু কথায় ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছে৷
অপর দিকে শুক্রবার রাতে থানার ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম অবশ্য বিষয়টিকে, সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, থানায় ঢুকে হুমকি দেয় নাই৷
এদিকে এ ঘটনা জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হলে এসপির নির্দেশে ওই রাতেই সহকারি উপ পরিদর্শক (এএসআই) শরীফকে ক্লোজড করে থানা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়৷
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক (ডিআই টু) সাজ্জাদ রোমন বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি। ঘটনাটি কী ঘটেছিলো তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অপরাধী যে হোক ছাড় পাবে না।
তবে, উপ পরিদর্শক (এএসআই) শরীফকে ক্লোজড করার বিষয়ে নিশ্চিত কোন তথ্য তিনি দিতে পারেন নি।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের থানায় ঢুকে অন ডিউটিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের প্রকাশ্যে শাসানোর ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও আইনগত কোন ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ৷ কেন নেয়া হয়নি জানতে চাইলে আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন জানিয়েছেন, এমপি মহাদয় ওরে (আল আমিন) ছাত্রলীগের পার্টি থেকে বহিষ্কার করে দিছে৷ আমি এমপি সাহেবকে জানাইছি নইলে নিজেই মামলা দিতাম৷