না.গঞ্জে হবে ২টি পাতাল রেল

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: যানজটমুক্ত করার পাশাপাশি রাজধানীর সাথে সহজে ও স্বল্প সময়ে নারায়ণগঞ্জের যোগাযোগ সুবিধা চালু করতে চারদিক দিয়ে অন্তত ২টি পাতাল রুট স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। এর মধ্যে প্রথম পাতাল রেলের প্রস্তাবিত রুট ‘এমআরটি লাইন-১’ হবে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত। এই লাইনের আরেকটি অংশ থাকবে মাটির উপর দিয়ে নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত। দুই অংশের এই পুরো প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। অর্থায়ন করবে জাপান সরকার। আগামী জুনে এ বিষয়ে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র সঙ্গে চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। একই মাসে অনুমোদন হতে পারে প্রকল্পের উন্নয়ন প্রস্তাব বা ডিপিপি। ২০২৬ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে ডিএমটিসিএল’র।

‘এমআরটি লাইন-১’-এর প্রকল্প পরিচালক সায়েদুল হক বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রাথমিক কার্যক্রমগুলো চলছে। আগামী জুনে নির্মাণ কাজের ডিপিপি অনুমোদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর দরপত্র আহ্বান করা হবে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলে আমরা ডিপো নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রথম পাতাল রেলের নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করব। নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জে এমআরটি লাইন-১ এর ডিপো নির্মাণ করা হবে বলে জানান তিনি। প্রকল্প পরিচালক আরও জানান, এরই মধ্যে এমআরটি লাইন-১ এর সম্ভাব্যতা যাচাই, পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ এবং পুনর্বাসন কর্মপরিকল্পনা শেষ হয়েছে। ভূমি অধিগ্রহণ ও নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য গত অক্টোবরে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ৯ ডিসেম্বর থেকে তারা প্রকল্পের নকশা প্রণয়নসহ সংশ্লিষ্ট কাজ শুরু করেছে। আনুষঙ্গিক এসব কাজ শেষ হলেই নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। ডিএমটিসিএল’র কর্মকর্তারা জানান, এমআরটি লাইন-১ প্রকল্প বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫২ হাজার কোটি টাকা। বাস্তবায়নের পুরোটাই জাপান থেকে পাওয়া যাবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে সরকারকে। ম্যাচিং ফান্ড হিসেবে স্থানীয়ভাবে কিছু তহবিল সংযুক্ত করা হবে। এ বিষয়ে আগামী জুনে জাইকার সঙ্গে অর্থায়ন চুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে। ইআরডি এ বিষয়ে কাজ করছে।

জানতে চাইলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) আমেরিকা ও জাপান উইংয়ের চিফ, অতিরিক্ত সচিব শহীদুল ইসলাম বলেন, আগামী জুনেই জাইকার সঙ্গে ৪০তম ঋণ প্যাকেজের আওতায় এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পে অর্থায়নে চূড়ান্ত চুক্তি হতে পারে। ভূ-গর্ভস্থ এই রেললাইন নির্মাণে ঋণ সহায়তা দিতে সম্মতি দিয়েছে জাপান। জুনের ২য় অথবা ৩য় সপ্তাহের মধ্যে চুক্তিটি সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জানা গেছে, ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-১-এর দুটি অংশ হলো- বিমানবন্দর রুট এবং পূর্বাচল রুট। এর মধ্যে কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেল রুটটি হবে মাটির নিচ দিয়ে। এ রুটেই বাংলাদেশের প্রথম আন্ডারগ্রাউন্ড মেট্রোরেল বা পাতাল রেল রুট নির্মিত হতে যাচ্ছে। অন্য অংশ পূর্বাচল থেকে নতুন বাজার পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রুটটি হবে এলিভেটেড অর্থাৎ মাটির উপর দিয়ে উড়াল রুট।

এছাড়া এমআরটি লাইন-৪ প্রকল্প শিরোনামে কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে ট্র্যাকের নিচ দিয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর আরো একটি পাতাল রেল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা খোঁজা হচ্ছে বলে জানান ডিএমটিসিএল’র কর্মকর্তারা।