না.গঞ্জ থেকেই সর্ব প্রথম যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: মহান মুক্তিযুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের ইতিহাসের খণ্ড খণ্ড অনেক অধ্যায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। বিলীন হতে চলছে মুক্তির ইতিহাসের বহু গল্প। এবারের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তেমনই এক হারিয়ে যাওয়া ইতিহাস নারায়ণগঞ্জবাসীর জন্য তুলে ধরেছেন আমাদের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট গোলাম রাব্বি।

রহমতউল্লাহ ইনস্টিটিউট ভবন। নারায়ণগঞ্জের ২নং রেলগেইট সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত। ৩তলা বিশিষ্ট্য ভবনটি ছোট হলেও এর ইতিহাস অনেক বড়। কারণ এখান থেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্ব প্রথম ঘোষণা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। জাতির জনক শেখ মজিবুর রহমান তৎকালিন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন । যিনি পরবর্তীতে ধীরে ধীরে বঙ্গবন্ধুতে রূপান্তিত হয়েছেন।

১৯৬৪ সালের ৬ই জুলাই দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক সংবাদ বিশ্লেষণে বিষয়টি উঠে আসে।

১৯৬৪ সালের ৫ জুলাই রহমতউল্লাহ ইনস্টিটিউট ভবনে নারায়ণগঞ্জ শহর ও মহকুমা আওয়ামী লীগ কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নরসিংদীর প্রধান আওয়ামী লীগ নেতা আফসারুদ্দীন সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতির জনক শেখ মজিবুর রহমান।

ইত্তেফাকের ওই সংবাদটিতে উল্লেখ করা হয়, যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ”আওয়ামী লীগ আজ যে যুদ্ধে নামেছে এ ‘যুদ্ধ’ ক্ষমতায় যাওয়ার ‘যুদ্ধ’ নয়। এ ‘যুদ্ধ’ পাকিস্তানের দশ কোটি মানুষের বাঁচা মরার ‘যুদ্ধ’। এ ‘যুদ্ধ’ ত্যাগের ‘যুদ্ধ’। এ ‘যুদ্ধ’ আমাদের স্বায়ত্তশাসনের যুদ্ধ। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার ‘যুদ্ধ’। বঞ্ঝনার অবসান ঘটানোর ‘যুদ্ধ’। এ ‘যুদ্ধ’ স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষ হিসাবে আবার আমরা বিশ্বসমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারার ‘যুদ্ধ’। সমগ্র বাংলা যদি বিশ্বাস ঘাতকতা না করে, দশ কোটি মানুষের বাঁচা-মরার এ ‘যুদ্ধে’ জয় আমাদের অবশ্যম্ভাবী।”

ওই দিন শেখ মুজিবুর রহমান আরো বলেন, ‘আসন্ন সংগ্রামে সকলেই আমাদের সঙ্গ নিতে রাজী। তবে কারাগারে যারা যেতে রাজি নয়, গরম পানিতে হাত দিতে যাঁরা রাজী নয়, চোগা চাপকনা ছাড়ে মাঠে নামতে যারা ইতস্তত। তাদেরকে বর্তমান পর্যায়ে সঙ্গে নিতে আমি রাজি না। বিপদ-সংকুল এই সংগ্রামের দিনে আপনারা বিশ্রাম করুন। জেল জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতনের ঝুকি নিয়ে যদি আমরা সংগ্রামে জয় হতে পারি, তখন আপনারা এসে শরিক হবেন। হাসি মুখে আমরা আপনাদের বরণ করে নিবো।’

সেই সময় পুরো রহমতউল্লাহ ইনস্টিটিউট শেখ মুজিবুর রহমান জিন্দাবাদ ধ্বনিতে কম্পিত হতে থাকে।