লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের একটি ইটভাটা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ৬২জনকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠছ। নারী-পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশু সন্তানসহ সকলকে একটি ঘরে থেকে পুলিশ উদ্ধার করে। ঘটনাটি বন্দর উপজেলার ফুনকুল এলাকার।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, শেরপুরের সদর থানা এলাকার কুতুবউদ্দিন ও তার নিয়োজিত শ্রমিকরা ইট প্রস্তুত করার জন্য বন্দরের ফুনকুল এলাকার এবিএফ ইটভাটা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধে আবদ্ধ হন। প্রতিবছরের ন্যায় তারা এ বছরও বন্দরে ওই ইটভাঁটিতে এসে ইট তৈরি করতে পুরো পরিবার নিয়ে আসেন। গত ৩১ মার্চ থেকে কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির কারণে ইট তৈরির কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু গত ১ এপ্রিল রাতে ইটভাটা কর্তৃপক্ষের কাছে তারা ইট তৈরির মজুরী বকেয়া বাবদ ৫০ হাজার ৫শ’ টাকা চান। কিন্তু মালিক পক্ষ উল্টো ৪ লাখ টাকা পাওনা দাবি করেন। এক পর্যায়ে মালিক পক্ষ ক্ষিপ্ত হয়ে শ্রমিকদেরকে মারধর করে ইটভাটার একটি ঘরে আটকে রাখেন। শ্রমিকরা দুই দিন অনাহারে অবরুদ্ধ থাকে। এঘটনা ইটভাটা শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজনরা জানার পর কল করেন ৯৯৯ নম্বরে। উদ্ধারের জন্য সহযোগীতা চান। ৯৯৯ এর থেকে কল পেয়ে কামতাল তদন্ত কেন্দ্র পুলিশ ছুটে যান ওই ইটভাটায়। বদ্ধ ঘর থেকে বের হয়ে আসেন ৪৫ জন নারী ও পুরুষ শ্রমিক ও শিশুসহ ৬২ জন।
কামতাল পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা গিয়ে বুধবার রাতে তাদেরকে উদ্ধার করে উভয় পক্ষের সঙ্গে আপোষ মিমাংসা করে বিষয়টি সুরাহা করেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা বৃহস্পতিবার রাতে এ বিষয়টি জানতে পারেন।
এ বিষয়ে বন্দর উপজেলার কামতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, ৯৯৯ নম্বর থেকে কল পেয়ে আমরা এবিএফ ইটভাটায় গেলে ওই শ্রমিকরা নিজেরাই বের হয়ে আসে। শ্রমিকদের আটকে রাখার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। এ সময় শ্রমিকরা মালিক পক্ষের কাছে ৫০ হাজার ৫শ’ টাকা পাওয়া আছে বলে দাবি করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ প্রথমে ৪ লাখ টাকা দাবি করে। আমরা উভয় পক্ষের কাছে বিস্তারিত শুনি। তাতে দেখা যায়, মালিক পক্ষ ১ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। পরে উভয় পক্ষের সঙ্গে আপোস মিমাংসা করে বিষয়টি সুরাহা করি। এবং ওই নারী ও পুরুষ শ্রমিক ও তাদের শিশুদের গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। তারা বুধবার রাতেই ইটভাটা থেকে বাড়ি চলে গেছে।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ওসি মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে টাকার লেনদেনের গড়মিল ছিল। শ্রমিকদের আটকে রাখার কোন ঘটনা আমরা পাইনি। পুলিশ গিয়ে মালিক ও শ্রমিকদের ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করে দিয়েছে। পরে শ্রমিকরা নিরাপদে যার যার বাড়ি চলে গেছে।