স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বন্দরে দক্ষিণ কলাবাগ এলাকায় তিন নারীকে গাছের সাথে বেঁধে, জুতার মালা পড়িয়ে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঘটে এ ঘটনা। তাদের উপর ‘যৌনকর্মী’ ট্যাগ দিয়ে করা হয়েছে ঘৃণ্যতম আচরণ, যার দৃশ্য সভ্য সমাজে দেখা যায় না। অমানুষিক এ নিযার্তন বর্তমান আইন শৃঙ্খলা-রক্ষাকারীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি ভাবছেন- কাদের জন্যে এ নিরাপত্তা-বাহিনী? কীসের জন্য এ পুলিশ? যদি মানুষ নিজের হাতেই আইন নিয়ে নেয়।
নির্যাতিতরা হলেন, বন্দর ইউনিয়নস্থ দক্ষিণ কলাবাগ খালপারস্থ মৃত মফিজ উদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওরফে ফতেহ(৫০),বন্দর শাহী-মসজিদ এলাকার বাছেদ আলীর মেয়ে আসমা বেগম(৩৫) ও বুরুন্দি এলাকার বকুল মিয়ার স্ত্রী বানু বেগম(৩০)।
পুলিশ সংবাদ পেয়ে দুপুর সাড়ে ৩টায় দ্রুত ঘটনাস্থলে(দক্ষিন কলাবাগ খালপার) গিয়ে ৩ নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
এঘটনার পরদিন রবিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতপাড়ায় মামলা করার উদ্দেশ্যে আসেন ফাতেমা বেগম। তবে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল এর পিপি রকিবউদ্দিন না থাকায়, মামলা করতে পারেন নি তিনি। এর জন্যে ১৮ ফেব্রুয়ারি আদালতপাড়ায় আবারো আসবেন।
এসময় ফাতেমা বেগম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমার পাশের বাড়িতে দুই মহিলার সাথে ইউসুফ মেম্বার মিলিত হয়ে অসামাজিক কার্যক্রম চালায়। এতে করে এলাকার যুবসমাজ বিরূপ পরিস্থিতিতে পরবে বলে আমি ও আমার ছেলে তাদের বাধা দিই। এতে করে ইউসুফ মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে আমার পরিবারেরর উপর হামলা চালায়।
তিনি আরো বলেন, ইউসুফ মেম্বারকে নির্যাতনের ঘটনার ব্যাপারে জানানো হলে তিনি মামলা করতে দেন নি। এমনকি এলাকার চেয়ারম্যান সাহেবের কাছেও যেতে দেয় নি।
এঘটনার ব্যাপারে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অজজহারুল ইসলাম বলেন, আমি নির্যাতিত নারীদের থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়েছি। তারা অভিযোগ করলে আমরা তদন্ত করে আঘাতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আইন নিজের হাতে নেবার অধিকার কোন সাধারণ মানুষের নেই। তাই কেউ অন্যায় করে থাকলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সেটা দেখবে। সাধারণ জনতা অভিযোগ করে বা অপরাধীদের ধরিয়ে দিতে সাহায্য করবে। তাই যারা মহিলাদের নির্যাতন করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রহিমা খাতুন বলেন, এঘটনায় যারা নারীদের উপর হামলা করেছে, তাদের এ আচরণে আমি নিন্দা জানাই। যে যত বড়ই অপরাধ করুক, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এর আগে সুষ্ঠু তদন্ত করে বের করতে হবে, সন্দেহভাজন ব্যক্তি অপরাধী কী না।