রি-রোলিং মিল কারখানা বলে স্বীকৃত হলেও, শ্রমিকরা সেই স্বীকৃতি পায় না : রাজেকুজ্জামান রতন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্টের ৫ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরীতে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগরীতে লাল পতাকা মিছিল করেন শ্রমিকরা। এরপর চাষাড়া শহীদ মিনারে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমাম হোসেন খোকন ও আবু নাঈম খান বিপ্লবকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।

রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ইমাম হোসেন খোকনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের অন্যতম শীর্ষ নেতা সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম খান বিপ্লব, গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন, জামাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ মিল্টন, দপ্তর সম্পাদক এস এম কাদির।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায় ৪ শতাধিক রি-রোলিং মিলে প্রায় ৩ লাখের বেশি শ্রমিক কর্মরত আছে। রি-রোলিং মিলে লৌহপিন্ড থেকে রড তৈরি করা হয়। প্রচ- গরম ও কষ্টসাধ্য কাজ বলে রি-রোলিং মিলের শ্রমিকদের কর্মসময় বিরতিসহ ২ থেকে ৩ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা বলি, শ্রমিকের শ্রমে-ঘামে সম্পদ তৈরি হয় এ কথার এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত রি-রোলিং মিলের শ্রমিকরা।

তিনি আরো বলেন, ‘রি-রোলিং মিল কারখানা বলে স্বীকৃত হলেও তার শ্রমিকরা মালিকের কাছে সেই স্বীকৃতি পায় না। একজন শ্রমিকের একমাত্র স্বীকৃতি হলো তার নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র। এই নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র না থাকায় যে কোন সময় ছাঁটাই এর শিকার হয় শ্রমিকরা। ট্রেড ইউনিয়ন করার আইনি বিধান থাকলেও নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র না থাকায় ইউনিয়ন করা শ্রমিকদের পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, প্রচন্ড গরম, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বিবেচনা করে যে সমস্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া দরকার তার কোনটাই রি-রোলিং মিলে নেয়া হয় না। তাই মাঝে মাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। আগুনে ঝলসে গিয়ে অনেক শ্রমিক মৃত্যুবরণ করে ও পঙ্গু হয়ে যায়।

তিনি বলেন, রি-রোলিং শ্রমিকদের মজুরি কাঠামো ২০১১ সালে ঘোষিত হয়েছিল। আইন হল ৫ বছর পর নতুন মজুরি কাঠামো হবে। আন্দোলনের মুখে এ বছর জানুয়ারিতে মজুরি বোর্ড ঘোষণা হলেও এখনো গেজেট না হওয়ায় মজুরি নির্ধারণের কাজই শুরু হয়নি। বর্তমান বাজার দর, পে কমিশন, শিপ ব্রেকিং এ মজুরি কাঠামো, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বিবেচনায় রি-রোলিং শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। নেতৃবৃন্দ ২২ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরি, নিয়োগপত্র-পরিচয়পত্র, কর্মস্থলে মৃত্যু হলে আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, শ্রমিকদের রেশন,আবাসন, চিকিৎসার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

সমাবেশ শেষে ২৩ জুলাই কাউন্সিলে নবনির্বাচিত ইমাম হোসেন খোকন সভাপতি ও আবু নাঈম খান বিপ্লব সাধারণ সম্পাদকসহ ১৮ সদস্য বিশিষ্ট রি-রোলিং স্টিল মিলস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটি পরিচয় করে দেয়া হয়।