স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজলকে শিশু সাদমান সাকি অপহরণের ঘটনায় জড়ানোর প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এনসিসির সকল কাউন্সিলর। পাশাপাশি সজলকে আবারও ফাঁসানোর চেষ্টা করলে দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
শিশু সাকির পিতা সৈয়দ ওমর খালেদ ওরুফে এপনের বক্তব্যের প্রতিবাদে বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে নগরীর নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের চতুর্থ তলায় সংবাদ সম্মেলনে করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলররা।
তাদের দাবি, কাউন্সিলর সজল শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠ লোক হওয়াতেই সাকি অপহরণের সাথে জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। গত ১৬ই মার্চ সাকিকে উদ্ধারের দাবিতে মানববন্ধনে যারা উপস্থিত ছিলেন ও এনসিসির নির্বাচনে যারা পরাজিত হয়েছেন, তারাই সজলকে নিয়ে এ নোংরা খেলাতে মেতে উঠেছেন। আর ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে এ কাজে ইন্ধন দিচ্ছে আরো অনেক রাঘববোয়াল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র (২) মতিউর রহমান মতি, ১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, ৪নং ওয়ার্ডের মো. আরিফুর হক হাসান, ২৩নং ওয়ার্ডের সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল প্রধান, ৮নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিন, ২০ নং ওয়োর্ডের গোলাম নবী মুরাদ, ১৯ নং ওয়ার্ডের মোঃ ফয়সাল সাগর, ২৭ নং ওয়ার্ডের কামরুজ্জামান বাবুল, ২নং ওয়ার্ডের আলী হোসেন আলা,২১ নং ওয়ার্ডের হান্নান সরকার, ২৫ নং ওয়ার্ডের এনায়েত হোসেন, ১২ নং ওয়ার্ডের শওকত হাসেম শকু, ২৬ নং ওয়ার্ডের মোঃ সামসুজ্জোহা, ১৩,১৪,১৫ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর শারমীন হাবিব বিন্নী, ২৫,২৬,২৭ নং ওয়ার্ডের হোসনে আরা বেগম, ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের মনোয়ারা বেগম ও ১৯,২০,২১ নং ওয়ার্ডের শিউলি নওশাদ প্রমুখ।
শুরুতে কাউন্সিলর মতিউর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ১৬ মার্চ সাদমান সাকিকে অপহরণের ঘটনায় কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজলকে জড়িয়ে মানববন্ধনে যে বক্তব্য দিয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যে প্রনোদিত। নাজমুল আলম সজল সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে জড়িত থাকায় একটি কুচক্রী মহলের ইন্ধনে ঘটনার ১৪ মাস পর এধরণের অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ, এঘটনার সাথে নাজমুল আলম সজলের নাম সন্দিহান হিসেবেও কোথাও নেই। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারাও বলেনি। তাই নিখোঁজ সাকির পিতাসহ মানববন্ধনে উপস্থিত থাকা ব্যক্তিদের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
লিখিত বক্তব্য শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর।
১২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু বলেন, নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করার জন্য যে ব্যক্তিগুলো সবসময় চেষ্টা করে, ওই ব্যক্তিরাই কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজলকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। অথচ, কোন খারাপ কাজে কাউন্সিলর সজলকে দেখা যায়নি। এই প্রথম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। আগামীতে আরো ভয়াবহ অভিযোগ উঠতে পারে। তাই আজ আমরা ঐক্যেবদ্ধ হয়েছি।
৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি বলেন, যারা মানববন্ধনে ছিলো তারা ওপেনই রয়েছে। কাউন্সিলর নাজমুল আলমকে সাকি অপহরণের সাথে জড়ানোর ঘটনায় আরো অনেক রাঘববোয়ালরা জড়িত রয়েছে। তারা চায় ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে।
১৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু বলেন, আজকের পর থেকে এ ধরণের আর কোন কিছু হলে আমরা বসে থাকবো না। আমরা ঐক্যেবদ্ধ হয়েছি। কোন কিছু হলেই দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে, সাথে সাথে আইনী ব্যবস্থাও নিবো।
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, ১৬ মার্চ নাজমুল আলম সকলকে দায়ি করে সৈয়দ ওমর খালেদ উরফে এপন বলেন, ‘সাকিকে উদ্ধারের বিষয়ে প্রশাসন কিছু করতে পারবে না। তাদের কাছে গেলে বলে, ওরা শামীম ওসমানের লোক, আমাদের পক্ষে সম্ভব না। উপরের কিছু নির্দেশনার ব্যাপার আছে।’
ওই মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সংগঠনের সভাপতি হাজী নুরুদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ, সাবেক ফুটবলার আজমত খন্দকার প্রমুখ।