সুফিয়ানকে প্রার্থী ঘোষণায় আ.লীগে ক্ষোভ, হাইয়ের দাবি ‘ঘোষণা দিই নাই’

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আবু সুফিয়ানকে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণা দিয়েছেন দলটির সভাপতি। আর এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দলের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র ক্ষোভ। প্রশ্ন উঠেছে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাইয়ের এহেন ভূমিকা নিয়ে।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আব্দুল হাই ওই ঘোষণা দেন।

সূত্র বলছে, বন্দর উপজেলা নির্বাচনে তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম তালিকা চূড়ান্ত করে কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছিলো জেলা আওয়ামী লীগ। এরা হলেন, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এম এ রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান এবং মদনপুর ইউনিয়ণের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম।

বলা হচ্ছে, কেন্দ্র থেকে এই তিনজনের মধ্যে যে কোনো একজনকেই নৌকা মাঝি হিসেবে নির্ধারণ করবে মনোনয়ন বোর্ড। পরে প্রার্থী ঘোষণা দিবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এর আগেই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে দিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। আর এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

সুফিয়ানকে সমর্থন জানিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই তার বক্তব্যে বলেন, নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ থেকে সুফিয়ানকে সমর্থন দিবে।

এদিকে সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছিলো, আড়াইহাজার উপজেলা নির্বাচনে হেলো সরকারকে সমর্থন জানিয়ে গোপন চিঠি পাঠিয়েছিলো জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল। আর এই চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর আড়াইহাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। বলা হচ্ছে, হেলো সরকার থেকে অর্থিক সুবিধা নিয়ে তারা এহেন কর্ম সম্পাদন করেছেন।

এবার আবু সুফিয়ানের বেলায়ও অনুরূপ কাজ হয়ে থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। তবে, এতে করে দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট হবে বলেই মন্তব্য করেছেন অনেকে।

তবে, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই দাবি করেছেন, সুফিয়ানকে সমর্থন দিই নাই। সমর্থন দেওয়ারও কোনো এখতিয়ারও আমাদের নেই। প্রার্থী ঘোষণা করবে নেত্রী। আমরা কেবল তিনজনের নাম কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। সেই তালিকায় সুফিয়ানের নাম ছিলো তিন নম্বরে। এমনকি ওই ফাইলে এটাও লেখা ছিলো সুফিয়ান সিটি করপোরেশনের ভোটার। তবে, সুফিয়ান জানিয়েছিলো সে ইউনিয়ণের ভোটার হবেন। সেটি পরে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কেউ যদি বলে থাকে আমি বা আওয়ামী লীগ সুফিয়ানকে আমাদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছি সেটি ভুল। এসব মিথ্যা প্রচার। আমি কেন, আমাদের কারোরই প্রার্থী ঘোষণা দেবার অধিকার নাই।

প্রসঙ্গত, মেয়র আইভীর ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে একলাফে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন আবু সুফিয়ান। ইতোপূর্বে সহযোগি সংগঠনগুলোতে তার তেমন ভূমিকা না থাকলেও নিজেকে তিনি যুবলীগ নেতা হিসেবেই অতীতে পরিচয় দিতেন। একই সাথে অভিযোগ রয়েছে, সিটি করপোরেশনের প্রায় সব কাজের টেন্ডারও পেয়ে থাকেন এই সুফিয়ান। মোদ্দা কথা মেয়র আইভীর নেক নজরের কারণে রাতারাতি নিজেরে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটনোদের মধ্যে জ্বলজ্বলে উদাহর সুফিয়ান। তবে, তাকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানেই রয়েছে নানা ধরণের বিতর্ক।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments