স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আজকের এই শুরুটা যোগাযোগ ইতিহাসে মাইল ফলক হয়ে থাকবে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সত্তুর বছর পর আবার নৌ চলাচলের শুরুটা প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পাগলা মেরী এন্ডারসন ভিআইপি জেটিতে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা ক্রুজ সার্ভিস এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ভারতের সাথে আমাদের নৌ চলাচল সত্তর বছর বন্ধ ছিল, প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে আবার এ পথে নৌ চলাচল শুরু হল। এটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সচিব আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের নদীগুলি ড্রেজিংয়ের যে পরিকল্পনা করেছেন তা বাস্তবায়িত হলে ঢাকায় যানবাহনের যে চাপ রয়েছে সে চাপ কমবে এবং ঢাকাগামী সড়ক গুলির উপরও চাপ কমবে।
আজ (শুক্রবার) নারায়ণগঞ্জ থেকে এমভি মধুমতি নামের যাত্রীবাহী ক্রুজশীপ ভারতের কলকাতার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। একই দিন ভারত থেকে একটি ক্রুজ শীপ ঢাকা অভিমুখে রওনা করবে। এমভি মধুমতি ক্রুজশীপে করে যাত্রীরা যেতে যেতে সুন্দরবনসহ দক্ষিনবাংলার অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে করতে কলকাতায় পৌছে যাবেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এম.ভি মধুমতিতে সিঙ্গেল ও ডাবল মিলিয়ে ৬০টি কেবিন রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ ও ভারতের সাথে নৌ যোগাযোগের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, ১৯৭২ সালে অভিন্ন নদী ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যৌথ নদী কমিশন। তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ভারতের সাথে করেন ঐতিহাসিক গঙ্গাপ্রবাহ চুক্তি। আর এবার তিনি নৌপথে একটি নতুন দিগন্ত রচনা করলেন। ৭০ বছর পরে আবার চালু হচ্ছে ক্রুজ শীপ। ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ যোগাযোগের মাইলফলক হয়ে থাকবে। আজ ঢাকা থেকে এমভি মধুমতি নামের এই যাত্রীবাহী ক্রুজশীপ ভারতের কলকাতার উদ্দেশ্যে যাচ্ছে। একই দিন ভারত থেকে একটি ক্রুজ শীপ ঢাকা অভিমুখে রওনা করবে। এমভি মধুমতি ক্রুজশীপে করে যাত্রীরা যেতে যেতে সুন্দরবনসহ দক্ষিনবাংলার অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন। উপভোগ করতে করতে যাত্রীরা কলকাতায় পৌছে যাবেন। নদীর দেশ বাংলাদেশ। আমাদের বাংলাদেশের যত শহর, যত বন্দর যত বাজার যত সভ্যতা তার সবই নদীর তীরে হয়েছে। নৌপথে ভ্রমন ছিলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে প্রিয়। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের ও জাতীয় নেতৃবৃন্দকে নিয়ে চাঁদপুর, বরিশাল , গোয়ালন্দ হয়ে গোপালগঞ্জে তার বাড়িতে যাতায়াত করতেন। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার পিতার সাথে সেই ভ্রমনের স্মৃতি এখনো মাঝে মাঝে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন। আমাদের দেশের নদীগুলি কত সুন্দর এটা তিনি মাঝে মাঝে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন।
এই ক্রুজ শীপের মাধ্যমে দুই দেশের সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে এবং আমাদের এই যাত্রা অব্যহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বুড়িগঙ্গার পানি পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমরা এজন্য কাজ করছি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদানকে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি। দু’দেশের মধ্যে নতুন করে এই নৌ-চলাচল আমাদের বন্ধুত্বের বন্ধনকে আরো দৃঢ় করবে।